পবিত্র ঈদুল আজহার উপলক্ষে শ্রমিক-মেহনতিসহ সর্বস্তরের জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন সবুজ-বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রমিক নেতা ইসমাইল হোসেন ঠান্ডু।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে ) বিকালে সবুজ-বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষে থেকে এ শুভেচ্ছা বার্তা জানান তিনি।
শুভেচ্ছা বার্তায় সবুজ বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রমিক নেতা ইসমাইল হোসেন ঠান্ডু বলেন, মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তার পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.) কে আল্লাহ রাহে কুরবানি করার জন্য গলায় ছুরি চালিয়ে ছিলেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইব্রাহিম (আ.) এই ত্যাগ এতটাই পছন্দ করেছেন যে তাঁর প্রতি খুশি হয়ে তাকে মুসলিম জাতির পিতা হিসাবে মনোনীত করেছেন। ইব্রাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.) আল্লাহর কাছে পুরোপরি আত্মসমার্পণ করেছেন। আল্লাহর কাছে ইব্রাহিম (আ.) এর মত আত্মসমাপর্ণ না করা পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না। ঈদ-উল আজহা আমাদেরকে আল্লাহর কাছে আত্মসমার্পণের শিক্ষা দিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, মানুষ যখন তার প্রভুর নিকট আত্মসমার্পণ করে তখন দুনিয়াবী চিন্তাধারায় তাদের জীবন পরিচালিত হওয়ার সুযোগ থাকে না। বরং তখন প্রতিটি মানুষকে জীবনযাপন করতে হয় খোদায়ী বিধান অনুসারে। খোদায়ী বিধান সমাজ রাষ্ট্রকে কল্যাণকামী করে। মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি হয় না। প্রত্যেক মানুষ স্বাধীনভাবে বসবাসের সুযোগ পায়। ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য থাকে না। পারস্পারিক সহযোগিতা, সাম্য ও শান্তির এক দুয়ার উন্মোচিত হয়।ঈদ-উল আজহার শিক্ষা আমাদের জন্য অনেক বেশি জরুরি। আজ সমাজ কলুষিত হয়ে গেছে। ধনী-গরিবের বিভেদ আকাশ ছুঁয়ে গেছে চারিদিকে শোষণ-নিপীড়নে শ্রমিক-শ্রমজীবী মানুষরা অতিষ্ঠ” দুঃখ বেদনা আজ তাদের নিত্য সঙ্গী। এমতাবস্থায় ঈদ-উল আজহার শিক্ষা সমাজে কায়েমের মাধ্যমে কল্যাণমুখী সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময়ের দাবি। যে সমাজে ধনী-গরিবের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও একত্মাবোধ সৃষ্টি হবে। সামাজিক মর্যাদা, ন্যায় বিচার ও মানবতা প্রতিষ্ঠা হবে এই সমাজের একমাত্র লক্ষ্য।
তিনি আরো জানান, আমাদের দেশের শ্রমিক-শ্রমজীবী মানুষদের ঘরে আনন্দ উৎসব ঈদ ছাড়া আসে না। তাই আমাদেরকে ঈদের শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি ঈদের আনন্দ দেশের শ্রমিক-শ্রমজীবী মানুষদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে হবে। যারা ঈদ-উল আজহার দিনে পশু কুরবানি করবেন তারা নিজ উদ্যোগে শ্রমজীবী মানুষের ঘরে ঘরে কুরবানির গোশত পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। আমাদের মনের পশুত্ব ও সকল প্রকার অমানবিক মন-মানসিকতা বিসর্জন দিয়ে একটি ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার যাত্রা ঈদের দিন থেকে শুরু করতে হবে।
পরিশেষে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় দেখতে পাচ্ছি বেশিরভাগ পোশাক কারখানা গুলোতে বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে” অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ২৮ মে’র মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতাসহ সকল পাওনা পরিশোধ করার কথা বললেও মালিক পক্ষ এখনো বেতন-ভাতা পরিশোধ করেনি অবিলম্বে শ্রমিকদের বেতন ভাতা ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবি জানান এই নেতা। অন্যথায় শ্রমিকরা যদি ঈদ না করতে পারে তাহলে কাউকে করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন।